খাওয়াদাওয়ায় এনেছেন নিয়ন্ত্রণ। করছেন শারীরিক কসরত। তবুও কমছে না ওজন! উল্টে বেড়েই চলেছে!
বাড়ছে ওজন?
এই ভুলগুলো করছেন না তো?
প্রীতিময় রায়বর্মন
খাবারের পরিমাণ খুবই সামান্য...
আমাদের অনেকেরই ধারণা, কম খেলেই ওজন কমবে! এটা একেবারেই ভুল ধারণা। ওজন কমানোর জন্য পরিমিত পরিমাণ খাবার না খাওয়ার ফল শরীরে পুষ্টির অভাব। দেখা দেয় নানা শারীরিক সমস্যা। ওজন কমাতে গিয়ে হিতে বিপরীত! ওজন কমানোর জন্য নিজে ডাক্তারি করে না খেয়ে থাকা বা একদমই সামান্য পরিমাণ খাওয়া— এগুলো না করে কোনও ডায়েটেশিয়ানের পরামর্শ নিন।
মেনে চলুন তাঁর করে দেওয়া ডায়েট চার্ট। সাধারণত ওজন কমানোর জন্য অতিরিক্ত ক্যালরিযুক্ত খাবার যেমন তেলে ভাজা, ফাস্ট বা জাঙ্ক ফুড, মিষ্টি ইত্যাদি এড়িয়ে চলাই ভালো। ডায়েটে পরিমিত পরিমাণে থাকা চাই মরশুমি শাকসবজি, ফলমূল। ডায়েটে থাকবে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট বা জটিল শর্করা। যেমন লাল চাল, আল আটা, দানা বা বিচ জাতীয় খাবার ইত্যাদি।
শরীরচর্চা করলেও, দিনের অধিকাংশ সময়টাই কাটাচ্ছেন শুয়ে–বসে...
সকাল বা বিকেল নির্দিষ্ট সময় নিয়মিত শরীরচর্চা করছেন। তবুও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। আর হবেই বা কী করে? আপনি যে বাকি সময়টা শুয়ে–বসে আলসেমিতে কাটাচ্ছেন। ফলে শরীরচর্চার কোনও উপকার মিলছে না।
তাই নির্দিষ্ট সময় নিয়মিত শরীরচর্চার পাশাপাশি ঘুম বা বিশ্রামের সময়টুকু বাদ দিয়ে বাকি সময়টা শুয়ে–বসে না থেকে কায়িক পরিশ্রম বা কোনও কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখুন।
থাকছেন অনেকক্ষণ না খেয়ে...
অনেকেই অফিস, কাজের চাপ ইত্যাদি কারণে অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকেন। ওজন বাড়ার এটা কিন্তু অন্যতম একটি কারণ। কেন বলুন তো? অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে খিদে এতোটাই বেড়ে যায় যে তখন আর স্বাস্থ্যসম্মত পরিমিত পরিমাণ খাবার মুখে রোচে না।
তখন হাতের কাছে ফাস্ট ফুড, জাঙ্ক ফুড যা পাওয়া পান তাই গোগ্রাসে খেতে শুরু করেন। পরিণতি শরীরে অতিরিক্ত পরিমাণে ফ্যাট, ক্যালরির অনুপ্রবেশ। তাই ওজন কমাতে হলে অল্প পরিমাণে কম ক্যালরিযুক্ত খাবার বারে বারে খান, অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকবেন না।
শুধুই ডায়েট, অনীহা শরীরচর্চায়...
নির্দিষ্ট সময় পরিমিত পরিমাণ খাচ্ছেন। খাওয়াদাওয়ায় বেশ সুশৃঙ্খল। তেল মশলা দেওয়া রিচ খাবার খান না, এড়িয়ে চলেন ফাস্ট ফুড। তবুও ওজন বিন্দুমাত্র কমছে না। সমস্যাটা কোথায় জানেন? আপনার শরীরচর্চা বা এক্সারসাইজে অনীহা।
যে খাবারই খান না কেন, অতিরিক্ত ক্যালরি বার্ন করতে প্রতিদিন কম করে ৩০ মিনিট থেকে ১ ঘণ্টা শরীরচর্চা ভীষণ জরুরি। আর তা না করলে কঠোর ডায়েট মেনেও লাভের লাভ কিছুই হবে না।
কার্বোহাইড্রেট একেবারেই বাদ...
মাছে–ভাতে বাঙালির অনেকেই ওজন বাড়ার ভয় ভাত খান না! ভাত খেলেই নাকি ওজন বাড়বে! এটা একেবারেই ঠিক নয়। পুষ্টিবিদরা বলছেন, শরীরের ওজন ও উচ্চতা অনুযায়ী ঠিক করতে হবে ডায়েট চার্ট। আর তাতে পরিমিত পরিমাণ ভাত, রুটি রাখাই যায়।
চাইলে আপনি ডায়েটে সিম্পল কার্বোহাইড্রেট বদলে কমপ্লেক্স কার্বোহাইড্রেট রাখতেই পারেন। যেমন লাল চাল, লাল আটা ইত্যাদি। কিন্তু কখনোই কার্বোহাইড্রেট ফ্রি ডায়েট নয়। ডায়েটে সবই থাকবে পরিমিত পরিমাণে, কোনওটাই মাত্রাতিরিক্ত নয়। খেতে হবে পরিমিত পরিমাণ আমিষও।
সব ছবি: আন্তর্জাল
(নিবন্ধটি শুধুমাত্র সচেতনতার জন্য।
কোনও ডাক্তারি পরামর্শ নয়।)
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Comments