সঠিক পুষ্টিই অসুখের সঙ্গে
লড়াইয়ের শক্তি জোগায়
জয়িতা ব্রহ্ম
ক্লিনিক্যাল ডায়েটিশিয়ান এবং সার্টিফাইড ডায়াবেটিস এডুকেটর
বর্তমান করোনা পরিস্থিতি কিছুটা স্থিতিশীল হলেও চিন্তা বাড়াচ্ছে তৃতীয় ঢেউয়ের গর্জন। বিগত ২ বছরে পাল্টেছে অনেক কিছুই। বদলে গেছে আমাদের জীবনযাত্রার ধরন। কার্যত গৃহবন্দি দশা প্রভাব বিস্তার করেছে আমাদের মন এবং শরীরের ওপর। আমাদের এই শরীর নামক যন্ত্রটির কার্যকারিতা সঠিক ভাবে বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যের চাহিদাও বদলেছে এই মারণ রোগের প্রকোপে। সর্বোপরি আমাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য দুই–ই বিঘ্নিত হয়েছে চরম মাত্রায়। এমতবস্থায় যদি আমরা এমন কিছু উপায় জানতে পারি, যা আমাদের এই অবস্থা থেকে রক্ষা করতে পারবে, তাহলে কেমন হয়? অবাক লাগছে তো? আসুন জেনে নিই কী সেই উপায় বা বলা ভালো কী সেই ম্যাজিক্যাল এলিমেন্ট?
হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন, সঠিক পুষ্টিই হল সেই চাবিকাঠি যা আমাদের বহু অসুখের সঙ্গে লড়াই করার শক্তি জোগায়। তাই প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর কথাটি মাথায় রেখেই রইল কিছু ডায়েট টিপস।
কম ফ্যাটযুক্ত উদ্ভিজ খাদ্য
আমাদের শরীরের ইমিউন সিস্টেম অনেকাংশেই নির্ভর করে শ্বেতকণিকার ওপর, যা অ্যান্টিবডি তৈরিতে সহায়তা করে। ভিটামিন, মিনারেল এবং ফাইবার সম্মৃদ্ধ উদ্ভিজ খাদ্য শ্বেতকণিকাকে উদ্ভুদ্ধ করে। কম ফ্যাটযুক্ত এই খাবার আমাদের অন্ত্রের কার্যকারিতাকে বৃদ্ধি করে এবং এতে ইমিউনিটির উন্নতি হয়।
ভিটামিন, মিনারেল, অ্যান্টি–অক্সিড্যান্ট
ফল ও সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ বিটা ক্যারোটিন, ভিটামিন ‘সি’, ভিটামিন ‘ই’ ও অ্যান্টি–অক্সিড্যান্ট, যা আমাদের শরীরের অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমিয়ে ইমিউনিটি বাড়াতে সাহায্য করে।
বিটা ক্যারোটিন
এটি আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক কোষগুলিকে উজ্জীবিত করে।
কিসে থাকে: রাঙালু, গাজর, সবুজ শাকসবজি ইত্যাদি।
ভিটামিন ‘সি’, ‘ই’
এগুলি আমাদের শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে বৃদ্ধি করে।
কিসে থাকে—
ভিটামিন সি: লাল ক্যাপসিকাম, কমলালেবু, স্ট্রবেরি, আম, ব্রকোলি, মুসুম্বি লেবু ইত্যাদি।
ভিটামিন ‘ই’: বাদাম, বীজ, পালং শাক, ব্রকোলি ইত্যাদি।
ভিটামিন ‘ডি’
এটি আমাদের রোগ প্রতিরোধে বাধা সৃষ্টিকারী উপাদানগুলির উৎপাদন ক্ষমতা কমিয়ে ভাইরাল ইনফেকশন ও শ্বাসনালীর সংক্রমণের ঝুঁকি অনেকটাই কম করে।
কিসে থাকে: সূর্যালোক, ডিমের কুসুম, তৈলাক্ত মাছ, ফর্টিফায়েড সিরিয়ালস, প্লান্ট বেসড মিল্ক ইত্যাদি।
জিঙ্ক
এটি এমন একটি মিনারেল যা শ্বেতকণিকাকে উজ্জীবিত করে আক্রমণকারী ভাইরাসের বিরুদ্ধে রক্ষা করে।
কিসে থাকে: কুমড়ো বীজ, তিল, বিনস, বাদাম, মুসুরির ডাল ইত্যাদি।
মনে রাখবেন
এই ডায়েট টি কোনোরকম কো–মর্বিডিটি বিহীন সুস্থ ব্যক্তির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। অসুস্থতার নিরিখে অবশ্যই ব্যক্তি বিশেষে ডায়েট পরিবর্তিত হয়। তাই অবশ্যই সঠিক ডিগ্রি যুক্ত ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ মেনে চলুন।
ছবি: আন্তর্জাল
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Comments