ডিম ভালো, কিন্তু কুসুম খারাপ! ডিমের সাদা অংশ খাওয়া যাবে, কিন্তু কুসুম খাওয়া চলবে না! আজকাল স্বাস্থ্য সচেতন অনেকেই ডিম সেদ্ধ করে সাদা অংশটা খান, কুসুম খান না। আবার অনেকের কাছে ডিম খাবো, কিন্তু কুসুম খাবো না, এটা আবার হয় নাকি! কুসুমকে নিয়ে এতো সমস্যা কেন? চলুন তো আজ খুঁজে বার করি সেই কারণ—
ডিম খাবো
কিন্তু কুসুম খাবো না!
প্রীতিময় রায়বর্মন
পুষ্টিকর খাবারের তালিকার একেবারে প্রথম সারিতে রয়েছে ডিম। কিন্তু ডিম খাওয়া নিয়ে সমস্যার শেষ নেই। ডিম খাবো, কিন্তু কুসুম খাবো না! খেলেই নাকি বাড়বে কোলেস্টেরল, রক্তচাপ! ডিমের কুসুম নিয়ে সমস্যার সূত্রপাত ১৯৬৮ সালে। ‘আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন’ বলল, হার্টের সমস্যা থাকলে সপ্তাহে কুসুমসহ তিনটির বেশি ডিম খাওয়া চলবে না। কারণ হিসেবে বলা হল, কুসুম সরাসরি রক্তে কোলেস্টেরলে বাড়ানোর ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলতে পারে। কিন্তু আজ এই ধারণায় বদল এসেছে। বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গেছে, রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়াতে খাবারে থাকা কোলেস্টেরলের ভূমিকা নেই বললেই চলে। তাই ডিমের কুসুম নিয়ে দুশ্চিন্তা না করাই ভালো। সব খাবারের মতো এটাও খাওয়া যায়। তবে পরিমিত। মাত্রাতিরিক্ত নয়।
বিশ্বব্যাপী সমাদৃত ডিমের পুষ্টিগুণ অনেক খাবারকেই টেক্কা দিতে পারে। শরীরের প্রয়োজনীয় পুষ্টির চাহিদা মেটাতে সক্ষম ডিম। আমাদের শরীরের অতি প্রয়োজনীয় ১৩টি পুষ্টিগুণ রয়েছে ডিমে। সুষম ডায়েটের অন্যতম ডিম। ডিমে রয়েছে ৯ধরনের অ্যামিনো অ্যাসিড, যা মেটায় শরীরে প্রোটিনের চাহিদা। আছে জিঙ্ক, আয়রন, ভিটামিন ‘এ’, ভিটামিন বি–৬, ভিটামিন বি–১২, ভিটামিন ‘ডি’। সেলেনিয়ামের খুব ভালো উৎস ডিম। ইমিউনিটি বা রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়াতে ডিমের রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। সুস্বাদু আর সহজলভ্য ডিমকে বলা হয় ‘গরিবের প্রোটিন’।
ফাস্ট ফুড খাবো, জাঙ্ক ফুড খাবো, শরীরচর্চা করবো না, আর ব্রাত্য করে রাখবো ডিমের কুসুমকে! যতদোষ কুসুমের! পুষ্টিবিদদের কথায়, একসঙ্গে এতো পুষ্টিগুণ খুব কম খাবারেই আছে। একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ প্রতিদিন কুসুমসমেত একটি করে ডিম খেতেই পারেন। তবে হার্ট বা কিডনির ক্রনিক অসুখ থাকলে বা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হলে ডিম খাওয়ার আগে অবশ্যই চিকিৎসক বা ডায়েটেশিয়ানের পরামর্শ নেবেন।
সব ছবি: আন্তর্জাল
(নিবন্ধটি কোনও ডাক্তারি পরামর্শ নয়)
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Comments