হেডফোন, ইয়ারবাড এগুলো এখন আমাদের নিত্যসঙ্গী। জেন ওয়াইয়ের পছন্দ উচ্চস্বরে মিউজিক। আর এ সবের কারণে মারাত্মক ঝুঁকিতে আমাদের শ্রবণযন্ত্র
শ্রবণশক্তি হ্রাসের ঝুঁকিতে
১৩৫ কোটি বিশ্ববাসী!
প্রীতিময় রায়বর্মন
চিকিৎসাবিজ্ঞানের গবেষকদের আশঙ্কা, বর্তমানে প্রায় ১ বিলিয়ানের (১০০ কোটি) বেশি কিশোর–কিশোরী ও যুবক–যুবতী শ্রবণশক্তি হারানোর মুখে দাঁড়িয়ে। ‘বিএমজে গ্লোবাল হেলথ জার্নাল’–এ প্রকাশিত প্রতিবেদনে এমনই আশঙ্কার কথা শুনিয়েছেন গবেষকগণ। তাঁদের পরামর্শ এ ব্যাপারে রাষ্ট্রকে এগিয়ে আসতে হবে। চালু করতে হবে ‘নিরাপদ শ্রবণ’ নীতি। প্রযুক্তির ব্যবহারে তারস্বরে মিউজিক আমাদের শ্রবণ যন্ত্রের জন্য কতটা হানিকর তা বোঝাতে হবে।
গবেষণা রিপোর্টে বলা হয়েছে, আজকাল মানুষজন হেডফোন বা ইয়ারবাডে গান শোনার সময় শব্দের মাত্রা বেশিরভাগ সময়ই ১০৫ ডেসিবেল পর্যন্ত পৌঁছে যায়। কনসার্ট বা বিনোদন অনুষ্ঠানে শব্দের গড় মাত্রা থাকে ১০৪ থেকে ১১২ ডেসিবেল পর্যন্ত। প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে এই মাত্রা ৮০ এবং বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ৭৫ ডেসিবেলের বেশি হলে তা বিপজ্জনক।
গবেষণায় অংশ নেওয়া ১২–৩৪ বছর বয়সী ২০,০০০ জনের মধ্যে উপর ৩০টিরও বেশি গবেষণা চালানো হয়। সেই গবেষণালব্ধ ফলাফল বিশ্লেষণ করে গবেষকদের আশঙ্কা, এই মুহূর্তে বিশ্বে ১২–৩৪ বছর বয়সী (২.৮ বিলিয়ন) মোট জনসংখ্যার ১.৩৫ বিলিয়ন (১৩৫ কোটি) শ্রবণশক্তি হ্রাসের ঝুঁকিতে রয়েছেন!
ডঃ লরেন ডিলার্ড–এর কথায়, সহনক্ষমতার বেশি মাত্রায় শব্দ দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলতে পারে। ধীরে ধীরে শ্রবণশক্তি হ্রাস করে। উচ্চস্বরে কনসার্টে যাওয়ার পর সেই শব্দ তাঁদের কানে অনুরণিত হয় এক থেকে দু’দিন। এমনকী তাঁরা কানে পর্যন্ত ঠিকমতো শুনতে পান না। দু–একদিন পরে আবার ঠিক হয়ে যায়। এরকম পরিস্থিতি যদি দিনের পর দিন চলতে থাকে তাহলে শ্রবণযন্ত্র পুরোপুরি বিকল বা স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)–র পরামর্শদাতা ও মেডিক্যাল ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ক্যারোলিনার অধ্যাপক ডঃ ডিলার্ড–এর পরামর্শ, মিউজিক ডিভাইস নির্মাতারা নিরাপদ শব্দের মাত্রা মেনে ডিভাইস বাজারে আনুক এবং থাকুক সরকারি নজরদারি। শব্দযন্ত্রে বা স্মার্টফোনে শব্দের মাত্রা বেশি হলে থাকুক সতর্ক অ্যালার্ম বা নোটিফিকেশন অ্যালার্টের ব্যবস্থা।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)–র সুপারিশ, কনসার্ট বা বিনোদনে যেন শব্দের মাত্রা ১০০ ডেসিবেল পার না করে। শ্রবণ সুরক্ষায় সরকারকে নিতে হবে উদ্যোগ। স্মার্টফোন, ইয়ারফোন বা ইয়ারবাড বর্তমান প্রজন্মের পড়ুয়া থেকে অফিসকর্মী সবার কাছেই খুবই প্রয়োজনীয় এবং জরুরি হলেও এর নেতিবাচক দিক সম্পর্কেও আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
সব ছবি: আন্তর্জাল
(নিবন্ধটি শুধুমাত্র সচেতনতার জন্য।
কোনও ডাক্তারী পরামর্শ নয়।)
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Comments