শীতে স্নানের সময় গরম জল চাই–ই চাই। অনেকে আবার দিনের শেষে বাড়ি ফিরে স্ট্রেস–মুক্তি হতে গরম জলে স্নান করেন। তবে অতিরিক্ত গরম জল ত্বকের পাশাপাশি চুলের স্বাস্থ্যের জন্যও ক্ষতিকর। চুলের স্বাস্থ্যকে বারোটা বাজাতে ওস্তাদ অতিরিক্ত গরম জল। এমনিতেই চুল শুষ্ক হওয়া বা চুল পড়ার সমস্যা কার নেই বলুন তো?‌ সেই সমস্যাকে আরও ইন্ধন জোগায় গরম জল। এখন আমরা চুলে বিভিন্ন কায়দা করতে বেশ পারদর্শী। আর তার জন্য নানা রকম প্রসাধনী বা যন্ত্রের ব্যবহারে চুল এমনিতেই নাজেহাল। তারপর যদি আবার অতিরিক্ত গরম জলের অত্যাচার হয় তাহলে চুলের স্বাস্থ্যের একেবারে দফারফা।

অতিরিক্ত গরম জল চুলের
স্বাস্থ্যকে বারোটা বাজাতে ওস্তাদ

প্রীতিময় রায়বর্মন

 শীতে প্রতিদিন মাথায় গরম জল দিলে চুল পড়ার সমস্যা বাড়তে পারে। কারণ গরম জল বেশ ভালোই পারে চুলের গোড়াকে কমজোরি বা দুর্বল করতে। ফলে শুরু হয় চুল ঝরে পড়া। গরম জলে মাথার স্ক্যাল্প থেকে নিঃসৃত ন্যাচরাল অয়েলের নিঃসরণ বন্ধ হয়ে যায় বা ভারসাম্য নষ্ট হয়। ফলে তেলের অভাবে চুল শুষ্ক ও খরখরে হয় যায়। নষ্ট হয় চুলের স্বাভাবিক জেল্লা।

আর জানেন তো গরম জল মাথায় দেওয়ার অর্থ খুশকিকেও ডেকে আনা। কারণ গরম জলে মাথার তালু বা চুলের গোড়া ড্রাই বা শুষ্ক হয়ে যায়। আর শুষ্ক তালু খুশকির জন্য একেবারে উপযুক্ত পরিবেশ। হাত–পায়ের ত্বক শুষ্ক হলে যেমন চুলকায় বা র‌্যাশ বের হয়, তেমনই তালু শুষ্ক হলেও একই সমস্যা দেখা দিতে পারে।

গরম জল চুলের গঠনকে এতটাই এলোমেলো করে দেয় যে চিরুনি দিয়ে চুল আঁচড়ানোর সময় চুলের ডগা ভেঙে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই শীতে চুলে অতিরিক্ত গরম জল দেওয়ার আগে দু’‌বার ভাবুন।

শীতে চুলের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে চাইলে অতিরিক্ত গরম জল যেমন চুলে দেবেন না, তেমনই এ সময় খুব ঘন ঘন শ্যাম্পুও করবেন না। শ্যাম্পু করতে হলে নারকেল তেল বা ভালো ব্র‌্যান্ডের কোনও তেল মেখে কিছুক্ষণ অপেক্ষা করে তারপর শ্যাম্পু করুন। সপ্তাহে অনন্ত একদিন ভালো ভাবে কন্ডিশনিং করুন।

শীতের শুষ্ক দিনগুলোতে চুলের স্বাস্থ্যের জন্য তেল খুব জরুরি। একেবারে ঠান্ডা জল মাথায় দিতে না পারলে ঈষদুষ্ণ জল দিন। কিন্তু কখনোই ফুটন্ত জল দেবেন না। এখন আমাদের হাতে সময়ের বড়ই অভাব। চুল শুকনোর জন্যও ব্যবহার করি যন্ত্র। তবে শীতে চুল শুকনো বা সোজা বা কোকরা করার এ সব যন্ত্রের ব্যবহার থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। স্বাভাবিক উপায়েই চুল শুকনো করুন।

সঙ্গে প্রসাধনীর ব্যবহারও যতটা পারেন নিয়ন্ত্রণ করুন। আর একটা কথা মনে রাখুন শীতে ভিজে চুলে কখনোই বাইরে বেরোবেন না। কেন জানেন?‌ শীতে বাড়ে দূষণ। আর চুল ভিজে থাকলে দূষণের প্রভাব চুলে পড়বে।

শীতে অনেকেই রোমাঞ্চ বা অ্যাডভেঞ্চারের টানে ছোটেন পাহাড়ি বা শীতপ্রধান অঞ্চলে। তাপমাত্রা কম এমন কোনও জায়গায় গেলে চুলের আর্দ্রতা ঠিক রাখতে টুপি বা স্কার্ফ ব্যবহার করুন।

শীতে আমাদের ত্বক যেমন বাড়তি যত্ন পায়, তেমনই চুলেরও একটু যত্নের প্রয়োজন। আর তা না হলে অল্প বয়সেই অকালপক্কতা, চুল পড়ার মতো হাজারও সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। 

সব ছবি: আন্তর্জাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *