নলেন গুড়ের গল্প
পায়েল কুমার
প্রখ্যাত পুষ্টিবিদ
ডায়েটেটিক্স–এর বিভাগীয় প্রধান, টেকনো ইন্ডিয়া ডামা হেলথকেয়ার মেডিক্যাল সেন্টার
দরজায় কড়া নাড়ছে শীত। আর শীতে বাঙালির প্রিয় নলেন গুড় না হলে চলেই না। আর আমরা সবাই যেহেতু ভালোবাসি এই নলেন গুড়, তাই আসুন জেনে নিই এই নলেন গুড়ের গুণাবলী—
✦ নলেন গুড় প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন ও প্রয়োজনীয় মিনারেলস যেমন আয়রন, পটাসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়ামে পরিপূর্ণ।
✦ ১৫-২০ গ্রাম অর্থাৎ ২ টেবিল চামচ নলেন গুড় প্রতিদিন খাওয়া যেতেই পারে। কারণ এতে উচ্চমাত্রায় পটাসিয়াম আছে। এতে ব্লোটিং বা পেটের ফোলা ভাব কমে এবং শরীরে জল ধরে রাখতে সাহায্য করে।
✦ নলেন গুড় ডাইজেসটিভ এনজাইম অর্থাৎ হজমে সাহায্যকারী এনজাইমগুলোকে সক্রিয় করে এবং খাদ্যনালী ও পৌষ্টিকনালিকে পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করে।
✦ উচ্চমাত্রায় আয়রণ থাকায় নলেন গুড় হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ ঠিক রেখে অ্যানিমিয়া সারাতে সাহায্য করে।
✦ উচ্চমাত্রায় ম্যাগনেসিয়াম থাকার জন্য এটা আমাদের নার্ভাস সিস্টেমকে ঠিক রাখতে সাহায্য করে।
✦ হজম ঠিকঠাক রেখে নলেন গুড় আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে দূরে রাখে।
✦ নলেন গুড় ডিটক্স হিসাবে কাজ করে, যা আমাদের শরীর থেকে দূষিত পদার্থগুলো বের করে লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে।
✦ নলেন গুড় অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট এবং জিঙ্ক ও সেলেনিয়ামের মতো মিনারেলে পরিপূর্ণ, যা ফ্রি-র্যা ডিক্যাল থেকে শরীরকে মুক্ত রাখে। এই ফ্রি-র্যা ডিক্যাল শরীরের অকাল বার্ধক্য ঘটায়।
✦ শরীরের অতিরিক্ত ওজন কমাতেও সাহায্য করে নলেন গুড়।
✦ শরীরে সরাসরি ক্যালরির যোগানে নলেন গুড়ের ভূমিকা রয়েছে, তাই যখন এটা আমরা আমাদের খাদ্যতালিকায় যুক্ত করি, তখন তা শরীরের মেটাবলিজম রেট (বিপাক ক্রিয়া) বাড়িয়ে দেয়, যা পরোক্ষে পেট ও কোমর সংলগ্ন মেদ কমাতে সাহায্য করে।
যদিও ডায়াবেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে সেইসব খাবার খাওয়া উচিত যাতে অতি কম মাত্রায় গ্লাইসেমিক ইনডেক্স থাকে, সেখানে নলেন গুড়ের গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের মাত্রা অতিরিক্ত থাকায় ডায়াবেটিস রোগীদের নলেন গুড় খাওয়া উচিত নয়।
গুড় একটি পুষ্টি সমৃদ্ধ মিষ্টি, কিন্তু এতে ৬৫-৮৫% সুক্রোজ থাকে এবং এই কারণে ডায়াবেটিক রোগীদের গুড় কোনোভাবেই খাওয়া যাবে না, এর উচ্চ মাত্রার চিনির পরিমাণের জন্য।
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Comments