প্রিম্যাচিওর বেবি হিসেবে জন্ম। জন্মের সময় ওজন ছিল আড়াই কেজি। ছোটবেলায় প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়তেন। ছিল হাঁপানি। তাঁকে সুস্থ রাখতে রীতিমতো লড়াই করতে হতো তাঁর মা–বাবাকে। সেই শিশুই আজ বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ বডিবিল্ডার!‌


জিম আরিংটন
৯০–তেও জিতছেন বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতা!‌
প্রীতিময় রায়বর্মন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার বাসিন্দা জিম আরিংটন। বয়স ছুঁয়েছে ৯০। এখনও অংশ নিচ্ছেন বডিবিল্ডিং প্রতিযোগিতায়। শুধু অংশ নেওয়াই নয়, জিতছেনও। এই মুহূর্তে তিনি বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ বডিবিল্ডার। ২০১৫ সালেই বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ বডিবিল্ডার হিসেবে নাম লিখিয়েছেন গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে। তখন তাঁর বয়স ছিল ৮৩ বছর। বয়সের কাছে কখনোই নতিস্বীকার করেননি আরিংটন। ৯০–এ পৌঁছেও ধরে রেখেছেন শরীরের পেশির সুগঠিত গঠন। এখনও জিমে গিয়ে শরীরচর্চা করেন। সপ্তাহে অন্তত তিনদিন জিমে যান। প্রত্যেকটি সেশনে দু’ঘণ্টা করে শরীরচর্চা করেন। 

সম্প্রতি আরিংটন অংশ নেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডার রেনোতে ইন্টারন্যাশনাল ফেডারেশন অব বডিবিল্ডিং ফেডারেশন (‌আইএফবিবি)‌ আয়োজিত প্রতিযোগিতায়। প্রতিযোগিতায় ৭০ বছরের বেশি বয়সী বিভাগে বডিবিল্ডিং–এ তিনি হন তৃতীয়। আর ৮০ বছরের বেশি বয়সীদের ক্যাটাগরিতে জিতে নেন প্রথম পুরস্কার।

ছোটবেলায় তাঁকে ভুগিয়েছে নানা অসুখ–বিসুখ। নির্ধারিত সময়ের দেড়মাস আগে জন্ম হয় আরিংটনের। প্রিম্যাচিওর বেবি। জন্মের সময় ওজন ছিল আড়াই কেজি। ছোটবেলায় প্রায়ই অসুস্থ হয়ে পড়তেন। ছিল হাঁপানি। তাঁকে সুস্থ রাখতে রীতিমতো লড়াই করতে হয়েছে তাঁর মা–বাবাকে। সেই শিশুই আজ বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ বডিবিল্ডার!‌

১৯৪৭–এ বয়স যখন ১৫, আরিংটন ভাবেন এভাবে আর ধুঁকতে ধুঁকতে জীবন কাটাবেন না। যেমন ভাবনা তেমন কাজ। শুরু করেন ভারোত্তলন। শুরুতে অবশ্য আকর্ষণীয় বডির জন্যই তিনি শরীরচর্চা করতেন। ধীরে ধীরে শরীরচর্চা পরিণত হয় নেশায়। তাঁর কথায়, ‘আমি চেয়েছিলাম সুপারহিরো হতে। যাঁরা শরীরকে সুগঠিত করার চেষ্টায় রত, আমি তাঁদের দেখতাম। এবং বুঝলাম, তাঁদের সবাইকে ছাপিয়ে যেতে হবে। আর সেটাই আমি করতে পেরেছি।’

খাওয়াদাওয়া প্রসঙ্গে আরিংটন জানিয়েছেন, তিনি আগে প্রচুর পরিমাণে দুধ এবং বিফ খেতেন, কারণ এগুলো প্রোটিনের খুব ভালো উৎস, যা মাংসপেশী মজবুত করতে সাহায্য করে। কিন্তু বয়সের সঙ্গে সঙ্গে তিনি বদলেছেন তাঁর ডায়েট। এখন তিনি মূলত মাশরুম ও অলিভ অয়েলে তৈরি স্বাস্থ্যকর খাবার খান। তাঁর কথায়, শরীরকে সুস্থ রাখতে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে জীবনযাপনের ধরনেও বদল দরকার।

গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে নাম ওঠার পর আরিংটন বলেছিলেন, তাঁর সামনে খুলে গেল এক নতুন দুনিয়া। যা তাঁর আগামীর চলার পথের অনুপ্রেরণা।

তথ্য সূত্র:‌ গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস
সব ছবি: আন্তর্জাল

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *