শরীরে কোনও সমস্যা দেখা দিলে আমরা ডাক্তারের কাছে না গিয়ে গুগল বা অন্য কোনও সার্চ ইঞ্জিনকে বানিয়ে ফেলছি আমাদের ডাক্তার! সেখানে গিয়ে অসুখের উপসর্গগুলো লিখে সার্চ করে নিজেই ঠিক করে ফেলছি কী অসুখ হয়েছে!
নিজেই নিজের ডাক্তার!
প্রীতিময় রায়বর্মন
ইন্টারনেট বা আন্তর্জাল এখন আমাদের জীবনের নিত্যসঙ্গী। সব কিছুতেই আজ মুশকিল আসান। যে কোনও অজানা তথ্য নিমেষে আমাদের সমানে হাজির করছে তার তথ্য ভাণ্ডার থেকে।
অনেক সময় দেখা যায়, শরীরে কোনও সমস্যা দেখা দিলে আমরা ডাক্তারের কাছে না গিয়ে গুগল বা অন্য কোনও সার্চ ইঞ্জিনকে বানিয়ে ফেলছি আমাদের ডাক্তার! সেখানে গিয়ে অসুখের উপসর্গগুলো লিখে সার্চ করে নিজেই ঠিক করে ফেলছি কী অসুখ হয়েছে! ক’দিন ধরে পেটে একটু ব্যথা ব্যথা ভাব, ইন্টারনেট ঘেঁটে পেটব্যথার সঙ্গে জটিল কোনও অসুখের বৈশিষ্ট্যের মিল খুঁজে নিলাম।
ভেবে নিলাম শরীরে জটিল কোনও অসুখ বাসা বেঁধেছে। হয়ে উঠলাম আতঙ্কিত। যা মানসিক দিক দিয়েও করে তোলে অসুস্থ। ইন্টারনেট দেখে নিজের রোগের উপসর্গগুলো মিলিয়ে জটিল কোনও রোগ সম্বন্ধে আতঙ্কিত হয়ে ওঠাটা কিন্তু বাস্তবে একটি অসুখ। অসুস্থতার লক্ষণ। চিকিৎসাবিজ্ঞান এই অসুখকে বলছে ‘সাইবারকন্ড্রিয়া’। অর্থাৎ ইন্টারনেট ঘেঁটে নিজের সামান্য কোনও রোগের সঙ্গে জটিল কোনো রোগের মিল খুঁজে অহেতুক আতঙ্কিত হয়ে ওঠা।
স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে চর্চা করা বা জানাটা খারাপ নয়। স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতন থাকাটাও আমাদের কর্তব্য। কিন্তু আমাদের মাথায় রাখতে হবে, আমরা ইন্টারনেটে যে সাইট থেকে অসুখ সংক্রান্ত তথ্য জানছি, তার বিশ্বাসযোগ্যতা কতটা? সেটা কি আদৌ নির্ভরযোগ্য?
আর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কথা, কোনও মেডিক্যাল জার্নাল পড়ে বা ইন্টারনেটে রোগের উপসর্গ মিলিয়ে নিজেই নিজের রোগ নির্ণয় করে ফেললাম, আর তার পর নিজেই ডাক্তারি করলাম— এটা কখনই করা উচিত নয়।
শরীরে কোনও সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। রোগ নির্ণয় আর চিকিৎসাটা চিকিৎসকেই করতে দিন। ইন্টারনেট আমাদের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত অনেক তথ্য দিতে পারে, কিন্তু সে কখনোই ডাক্তারের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে না।
সব ছবি: আন্তর্জাল
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Comments