বয়স ১১৫। তাতে কী? সে তো কেবলই একটা সংখ্যা মাত্র। এই বয়সেও যে দিব্যি সুস্থ–সবলভাবে বাঁচা যায় তা দেখিয়ে চলেছেন স্পেনের মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা। আরও একটা অবাক করা বিষয় এখনও পর্যন্ত জীবনে একবারের জন্যও তাঁকে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে যেতে হয়নি হাসপাতালে।
বিশ্বের প্রবীণতম মানুষ
মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা, বয়স ১১৫
শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে কখনও যেতে হয়নি হাসপাতালে!
প্রীতিময় রায়বর্মন
মারিয়ার ছোট মেয়ে ৭৮ বছরের রোসা মোরেটের কথায়, মায়ের শরীরের কোনও হাড় কখনও ভাঙেনি। এই বয়সেও মা সম্পূর্ণ সুস্থ, স্বাভাবিক। মায়ের দীর্ঘ আয়ুর জন্য মোরেট পূর্বপুরুষ সূত্রে পাওয়া জিনকেই কৃতিত্ব দিচ্ছেন।
গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের তথ্য বলছে, এতদিন বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ মানুষ ছিলেন ফ্রান্সের লুসিল হান্দোঁ। যিনি সিস্টার আন্দ্রেঁ নামেও পরিচিত ছিলেন। সম্প্রতি ফ্রান্সের এক নার্সিংহোমে ১১৮ বছর বয়সে মারা যান তিনি। লুসিলের মৃত্যুর পর এখন বিশ্বের প্রবীণতম মানুষ স্পেনের মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা।
গিনেস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসের অন্যতম পরামর্শদাতা রবার্ট ডি ইয়াংয়ের কথায়, লুসিলের মুত্যুর পর মারিয়াকে সবচেয়ে প্রবীণ নাগরিকের স্বীকৃতি দিতে পারে গিনেস কর্তৃপক্ষ। যদিও এর জন্য রয়েছে বেশ কিছু প্রক্রিয়া। যেমন গিনেস কতৃপক্ষ যাচাই করবে বয়সের প্রমাণপত্র, কথা বলবে পরিবারের লোকেদের সঙ্গে।
মারিয়ার জন্ম–নথি বলছে, তাঁর জন্ম ১৯০৭ সালের ৪ মার্চ। জন্মস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সানফ্রান্সিসকো। মারিয়ার জন্মের কিছুদিন আগে তাঁর পরিবার মেক্সিকো ছেড়ে চলে আসে যুক্তরাষ্ট্রে। এরপর ১৯১৫ সালে মারিয়ার বয়স যখন ৮, তখন তাঁর পরিবার পাড়ি দেয় তাঁদের আদি বাসস্থান স্পেনে। ১৯১৮ সালের স্প্যানিশ ফ্লু মহামারি, দুটি বিশ্বযুদ্ধ, স্পেনের গৃহযুদ্ধ— সবেরই সাক্ষী মারিয়া।
বাবা মারা যাওয়ার পর মায়ের সঙ্গেই স্পেনের বার্সেলোনায় থাকা শুরু মারিয়ার। বর্তমানে দু’দশক ধরে তিনি রয়েছেন স্পেনের উত্তর–পূর্বাঞ্চলের ওলট শহরে। ১৯৩১ সালে বিয়ে করেন মারিয়া। স্বামী ছিলেন পেশায় চিকিৎসক। তাঁদের সংসার–জীবনের স্থায়িত্ব প্রায় চার দশক। ৭২ বছর বয়সে মারা যান মারিয়ার স্বামী। তাঁদের ছিল তিন সন্তান। পরে এক সন্তান মারা যায়। বর্তমানে ১১ জন নাতি এবং ১১ জন পুতি নিয়ে মারিয়ার সংসার।
বয়স যে কেবলমাত্র একটা সংখ্যা তা প্রতিনিয়ত দেখিয়ে চলেছেন মারিয়া ব্রানিয়াস মোরেরা। ভালো থাকুন মারিয়া।
সব ছবি: আন্তর্জাল
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Comments