চোখে না দেখেও
সেরা ‘বার্ডওয়াচার্স’! 
প্রীতিময় রায়বর্মন

উরুগুয়ের জুয়ান পাবলো কুলাসো। জন্ম থেকেই তিনি চোখে দেখতে পান না। শুধুমাত্র পাখির ডাক শুনে অবলীলায় বলে দেন সেটা কোন পাখি! তাঁর এই বিশেষ শ্রবণশক্তির কারণে ৭২০ প্রজাতির ৩,০০০–এরও বেশি পাখির ডাক শুনে বলে দিতে পারেন সেটা কোন পাখির ডাক। দক্ষিণ আমেরিকার সেরা ‘বার্ডওয়াচার্স’ বা ‘পাখি পর্যবেক্ষক’। 

ছোট থেকেই জুয়ান পাখির ডাক বা শব্দ খুব স্পষ্ট বুঝতে পারতেন। এ ধরনের বিশেষ শ্রবণশক্তি বিশ্বের প্রতি ১০ হাজার মানুষের মধ্যে ১ জনের থাকে। এনসাইক্লোপিডিয়া থেকে পাখির নাম পড়ে, পিয়ানো বাজিয়ে বা অডিও রেকর্ডারে সেই সব পাখির ডাক জুয়ানকে শোনাতেন বাবা।

মিউজিয়ামে বা চিড়িখানায় নিয়ে গিয়ে বিভিন্ন পাখির পালকের স্পর্শ দিয়ে ছেলেকে চেনাতেন পাখিদের। তখন থেকেই জুয়ান শব্দ আর স্পর্শ দিয়ে পাখিদের চিনতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। আজ তিনি সেরা ‘বার্ডওয়াচার্স’। 

জুয়ানের কথায়, ছোট থেকেই পাখির ডাক শুনে পাখিদের নাম মনে রাখার চেষ্টা করতাম। ২০০৩ সালে এক পাখি–বিশেষজ্ঞের কাছে যাই। পাখিদের প্রতি ওনার ভালোবাসার কথা শুনে আমারও পাখিদের প্রতি ভালোবাসা জন্মায় এবং তিনি আমাকে একটি রেকর্ডার দিয়েছিলেন।

তাঁর এই বিশেষ ক্ষমতা তাঁকে সাউন্ডট্র্যাক ডকুমেন্টারিতে কাজ করার সুযোগ করে দিয়েছিল। এক দশকের বেশি সময় কাটিয়েছেন ব্রাজিলে। সেখানে তিনি কাজ করেছেন বায়োএকুইস্টিক ও প্রাকৃতিক শব্দ নিয়ে।

ডাক শুনে পাখি চিনতে পারার এই অসাধারণ ক্ষমতা ২০১৪ সালে তাঁকে জেতায় নেট জিও টেলিভিশনের এক পুরস্কার। সর্বোচ্চ পুরস্কার মূল্য ৪৫ হাজার মার্কিন ডলার পান জুয়ান। এর বেশির ভাগ অর্থ পরবর্তীকালে তিনি ব্যয় করেন অডিও রেকর্ডার কিনতে।

ওই অনুষ্ঠানে তাঁকে ২৫০টি পাখির মধ্যে ডাক শুনে ১৫টি পাখি চিহ্নিত করতে বলা হয়েছিল। তিনি অবলীলায় সব ক’‌টিরই সঠিক নাম বলেছিলেন।

উরুগুয়ে রিপাবলিক ইউনিভার্সিটির ফোনোলোজি বিভাগের প্রধান অ্যালিসিয়া মুনইয়ো–র কথায়, পাখির ডাক শুনে পাখি চিনতে পাড়ার এই বিশেষ ক্ষমতার জন্য শ্রবণশক্তির চেয়ে মস্তিষ্কের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে।‌

সব ছবি:‌ আন্তর্জাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *