আজ ২১ জুন।
আন্তর্জাতিক যোগ দিবস।

যৌবন ধরে রাখার চাবিকাঠি
গুরুপ্রসাদ ব্যানার্জী
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ব্যায়াম বিশারদ

আমি এই দিনটিকে কুর্নিশ করে প্রথমেই জানাব যে ভারতীয় যোগসাধনা সারা বিশ্বব্যাপী প্রসার লাভ করার জন্যই যোগাভ্যাসের বিদেশে এত কদর। বিদেশে ভারতীয় ক্ল্যাসিক্যাল গান বা নাচের সঙ্গে সঙ্গে যোগসাধনা সমানভাবে পরিচিত।
বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে যে যোগব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অর্গ্যান সতেজ এবং দীর্ঘদিন কর্মক্ষম থাকে। এবং এটাও প্রমাণিত সত্য যে আবাল বৃদ্ধবণিতা সবার পক্ষেই যে কোনো বয়সেই যোগব্যায়াম করা সম্ভব। নীরোগ থাকতে বা দীর্ঘায়ু পেতে হলে যোগব্যায়াম অপরিহার্য।

আমরা সবাই জানি, মুণিঋষিরা যোগব্যায়ামের মাধ্যমে কীভাবে নীরোগ ও দীর্ঘজীবনের অধিকারী হতেন। যৌবন ধরে রাখার চাবিকাঠি হচ্ছে সঠিক জীবনযাত্রা (‌লাইফস্টাইল)‌ এবং যোগাভ্যাস।
আমার সামান্য অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি যে আজকালকার প্রজন্মের বিশেষ করে ছেলেরা এই ব্যাপারে উদাসীন। আজকাল আমরা সবকিছুই ইনস্ট্যান্ট ফল লাভের আশা করে থাকি। তাই হয়তো নতুন প্রজন্মের অনেকেই মনে করে যে কেবল কিছুদিনের ভেতর শরীরের অন্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ব্যায়াম পরিহার করে কত তাড়াতাড়ি বাইসেপ্‌স ফুলিয়ে টি-শার্ট পরা যায়।

শরীর তৈরি করতে গেলে সাধনার প্রয়োজন। শরীরের সৌষ্ঠব বৃদ্ধি করতে গেলে দেহের প্রত্যেকটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের সঠিক ব্যায়াম প্রয়োজন এবং শরীরের বিভিন্ন অর্গ্যান যাতে কর্মক্ষম এবং সুস্থ থাকে সে দিকে নজর দেওয়াও বিশেষ দরকার। 
ধরা যাক কেউ ডাম্বেল দিয়ে ব্যায়াম করছে, কিন্তু সে পেটের গন্ডোগোল, হজমের সমস্যায় ভুগছে। তাহলে তার কি কাঙ্খিত চেহারা পাওয়া সম্ভব?

বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা থেকে অচিরেই মুক্তি পাওয়া যায় যোগব্যায়ামের মাধ্যমে। এই যোগাভ্যাস কিন্তু ওয়েট ট্রেনিং করার পরেও কিছুক্ষণের জন্য করা যেতেই পারে। জগৎ বিখ্যাত ব্যায়ামাচার্য স্বর্গীয় বিষ্ণুচরণ ঘোষের ছাত্রকূলের মধ্যে অসংখ্য মিঃ বেঙ্গল, মিঃ ইন্ডিয়া এবং মিঃ ইউনিভার্সে ভালো  র্যাঙ্কিংয়ে আছেন।

আমার নিজের চোখে দেখা এই সব ব্যায়ামবিশারদরা দীর্ঘক্ষণ ব্যায়াম করার পর প্রত্যেকদিন কিছুক্ষণ যোগব্যায়াম এবং প্রাণায়াম করতেন। কারণ যোগব্যায়াম শরীরকে নমনীয় এবং ফ্লেক্সিবল রাখতে সাহায্য করে। মাস্‌ল স্টিফ হলে সেই চেহারার বাড়-বৃদ্ধি কমে যায় আর দৃষ্টিকটু লাগে। 
করোনা অতিমারির সময় অনেক ডাক্তারবাবুরা প্রাণায়াম এবং যোগব্যায়াম দ্বারা ফুসফুস শক্তিশালী এবং ইমিউনিটি ক্ষমতা বাড়ানোর উপদেশ দিতেন।

এবার সবার বোঝা দরকার বর্তমান সময় এর উপকারিতা কতটা? আমরা প্রত্যেকেই এমনকি ছোট ছোট ছেলেমেয়েরা স্ট্রেস নামক মারণ রোগের অল্পবিস্তর শিকার— এর থেকে মুক্তির উপায় প্রাণায়াম এবং হাল্কা যোগব্যায়াম। 
যোগাভ্যাস ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে সচেতনতার বিশেষ প্রয়োজন। ছোট ছোট পাড়ার ক্লাব, সংস্থা এই ব্যাপারে উদ্যোগী হলে আজকালকার প্রজন্ম অনেকটাই উপকৃত হতে পারে। তদুপরি বাবা-মায়ের এই ব্যাপারে অবদান অবশ্যই আছে। তাঁরা একটু উদ্যোগী হয়ে নিজের ছেলে-মেয়েদের যোগব্যায়ামের উপকারিতা সম্পর্কে সচেতনতা ফিরিয়ে আনতে পারেন।

যেমন কোনো যোগব্যায়াম প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে ভর্তি করিয়ে বা ইউটিউব দেখিয়ে তাদের সচেতন করা। যদিও যোগশিক্ষক ব্যতীত যোগব্যায়াম বা প্রাণায়াম করা অনুচিত বলেই আমি মনে করি।
আমাদের প্রত্যেকেরই কর্তব্য আবার যোগসাধনাকে তার স্বমহিমায় ফিরিয়ে এনে বিশ্বের দরবারে পৌঁছে দেওয়া।    

ছবি সৌজন্যে:‌ গুরুপ্রসাদ ব্যানার্জী

গুরুপ্রসাদ ব্যানার্জীর সঙ্গে যোগাযোগ:‌ গুরু’জ ড্রিম জিম, জিডি– ৩৩৮, সেক্টর– ৩, সল্টলেক, কলকাতা– ৭০০ ০৬৪ এবং কলকাতার বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে আরও পাঁচটি সেন্টার। হোয়াটসঅ্যাপ:‌ ৯৮৩৬০–৮৮৯৯৮। ই-মেল:‌ gpbanerjee.gym@gmail.com‌। ফেসবুকে তাঁকে ফলো করতে ফেসবুক পেজে টাইপ করুন:‌ Guru Prasad Banerjee। ‌ইউটিউব চ্যালেন: Guru Prasad Banerjee FIT FUNDA। ওয়েবসাইট:‌ www.gurusdreamgym.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *