শোভাবাজার রায়
পরিবারের দুর্গাপুজো
মলয় সিন্হা
বাংলাদেশের অন্তর্গত বিক্রমপুর জেলার ভাগ্যপুর গ্রামে আনুমানিক ২১৬ বছর আগে শুরু হয় শোভাবাজার রায় পরিবারের দুর্গাপুজো। ওখানেই রায় পরিবারের আদিবাড়ি। শোনা যায়, গুরুপ্রসাদ রায় পরিবারের কুলদেবতা লক্ষ্মী–নারায়ণের মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। ওই মন্দিরেই পুজো শুরু হয়। পরবর্তীতে রায় পরিবারে শরিকরা বঙ্গভঙ্গের সময় কলকাতায় চলে আসেন। এপার বাংলায় রায় পরিবারের শরিকরা পুজো শুরু করেন ১৯৬৫–তে। পরিবারের রীতি মহালয়ার সাতদিন আগে কৃষ্ণনবমীতে পুজোর ঘট স্থাপন। সেইদিন থেকেই শুরু পুজো।
‘কলকাতার অবিনাশ কবিরাজ স্ট্রিটে এক শরিকের মন্দির ছিল। এখানেই আবার দুর্গাপুজো শুরু হয়। পরবর্তীকালে আমাদের আরেক শরিক কৃষ্ণদাস রায়ের বাড়িতে প্রতিষ্ঠিত লক্ষ্মী–নারায়ণ মন্দির। কুলদেবতা সেখানেই প্রতিষ্ঠিত। বর্তমানে আমাদের একটি নতুন মন্দির হয়েছে। তৈরি করে দেন কুমার প্রমথনাথ রায়। ওখানেই এবার পুজো হবে। কলকাতায় আমাদের অনেক শরিক আছেন। এ বছর পুজো হচ্ছে শরিক রাধিকালাল রায়ের প্রপুত্র রঞ্জিত রায়ের তত্বাবধানে ৫৫ শোভাবাজার স্ট্রিটে।’ জানালেন রায় পরিবারে অন্যতম সদস্য বঙ্কুবিহারী রায়।
তাঁর কথায়, ‘শরিকদের মধ্যে পুজোর পালার পরিবর্তন হয় ১৪ বছর অন্তর। এখন বংশের মধ্যে সবচেয়ে প্রবীণ রঞ্জিত রায়। এরপর উৎপল রায়, সুবীর রায়। আমার সমবয়সী বীরবল রায় পুজোতে অংশগ্রহণ করেন। পুজোকে ঘিরে গোটা রায় পরিবার মেতে ওঠে। কর্মসূত্রে দেশে–বিদেশে থাকলেও পুজোর সময় সকলে চলে আসেন।’
রাধাষ্টমীতে কাঠামোপুজো। মহালয়ার সাতদিন আগে কৃষ্ণনবমীতে পুজোর ঘট স্থাপন হয় রায় পরিবারে। সেইদিন থেকেই পুজো শুরু। প্রতিমা সাবেকি। গণেশ থাকে সরস্বতীর পাশে। কার্তিক থাকে লক্ষ্মীর পাশে। কলাবউ থাকে কার্তিকের পাশে। এইভাবে প্রতিমা তৈরি হয়ে আসছে।
পুজোর বিশেষ আচার রয়েছে রায় পরিবারে। পুজোর জন্য ১৩টি ঘট বসানো হয়। দুর্গাপুজোয় অন্নভোগ হয় না। ফল, মিষ্টি দেওয়া হয়। রায় পরিবার বৈষ্ণব তাই কখনও বলি প্রথা ছিল না। অষ্টমীর দিন কুমারী পুজো আর বিসর্জনের আগে সিন্দুর খেলা।
ছবি: কৃশাণু মোদক
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Comments