বাঘ-শিকারি
অংশুমান চক্রবর্তী
জিম করবেট ছিলেন একজন শিকারি। পাশাপাশি একজন বিখ্যাত পরিবেশবাদী। সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল তাঁর খ্যাতি। তিনি ছিলেন ইংরেজ। তবে জন্মেছিলেন ভারতে। কুমায়ুন অঞ্চলের নৈনিতাল শহরে। ২৫ জুলাই ১৮৭৫। ভারতবাসীদের তিনি বন্ধু মনে করতেন।
লাজুক দীর্ঘদেহী এই মানুষটির বাবা ক্রিস্টোফার করবেট ছিলেন শহরের পোস্টমাস্টার। জিম করবেটের বয়স যখন মাত্র চার, তখন তিনি বাবাকে হারান। কম বয়স থেকেই জলজঙ্গলে ঘুরতে ভালোবাসতেন জিম। অনুসরণ করতেন বুনো শুয়োরদের। একটা সময় তিনি দক্ষ শিকারি হয়ে ওঠেন। বাঘ–শিকারি হিসেবে তাঁর বিশেষ পরিচিতি তৈরি হয়। জানা যায়, ১৯০৭ থেকে ১৯৩৮ সালের মধ্যে তিনি মোট ৩৩টি মানুষখেকো বাঘকে হত্যা করেছিলেন। মনে করা হয়, এই বাঘগুলো ১২০০–এর উপর পুরুষ, মহিলা এবং শিশুদেরকে হত্যা করেছিল। তবে অকারণে তিনি পশুহত্যা করতেন না।
বাঘের পাশাপাশি তিনি দুটো মানুষখেকো লেপার্ডকেও হত্যা করেছিলেন। কখনও একা, কখনও প্রিয় কুকুরকে সঙ্গে নিয়ে তিনি শিকারে বেরতেন। শিকারের পাশাপাশি ভালোবাসতেন মাছ ধরতে এবং নৌকায় চড়তে। তাঁর গানের গলা ছিল চমৎকার। হাতে গিটার ধরিয়ে দেওয়া হলে তিনি বিস্তার করতেন সুরের মায়াজাল। লিখেছেন বই। জিম অংশগ্রহণ করেছিলেন প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে। তাছাড়া তিনি সৈনিক দলকে জঙ্গলে প্রতিরক্ষারও প্রশিক্ষণ দিয়েছিলেন এবং উন্নিত হয়েছিলেন ‘ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল’ পদে।
১৯৫৫–র ১৯ এপ্রিল তিনি প্রয়াত হন। তাঁর স্মরণে উত্তরখন্ডে ‘জিম করবেট ন্যাশনাল পার্ক’ নামে একটি পার্ক গড়ে তোলা হয়েছে। তাঁর জীবন নিয়ে দেশবিদেশে তৈরি হয়েছে একাধিক সিনেমা। ছবিগুলো সারা পৃথিবীতে সমাদৃত হয়েছে। বহু কবি তাঁকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন। এই শিকারিকে নিয়ে ছড়িয়ে আছে বহু কাহিনী। কিছু সত্যি, কিছু গল্প। আজ তাঁর জন্মদিন। ছোট্ট প্রতিবেদনের মাধ্যমে তাঁকে স্মরণ করা হল।
সব ছবি: আন্তর্জাল
Leave a Reply
Your email address will not be published. Required fields are marked *
Comments